schema:text
| - সম্প্রতি, “ক্ষমাচেয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিলো ডিবি প্রধান হারুন আর রশীদ” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।
ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)
টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিএমপি) প্রধান হারুন অর রশিদ পদত্যাগ করেননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো কয়েকটি সংবাদপাঠের ভিডিও ক্লিপ এবং ভিডিও প্রতিবেদনের অংশ যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে।
ভিডিও যাচাই-১
প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, Channel 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর “এসপি হারুনের বিষয়ে তদন্ত চলছে, অপরাধ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনাম প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
উক্ত ভিডিওর সংবাদ পাঠের অংশ এবং ভিডিও প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে তৎকালীন পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে আনিত একাধিক অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
ভিডিও যাচাই-২
পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর Ekushey Television-ETV এর ইউটিউব চ্যানেলে “ছেলের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অঝোরে কাদলেন এসপি হারুন || Ekushey ETV” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন বিদায়ী এসপি হারুন অর রশিদ।
অর্থাৎ, পুরোনো ঘটনার ভিডিও ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়াও, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র হতে ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের পদত্যাগের সত্যতা জানা যায়নি।
পাশাপাশি, মূলধারার সংবাদমাধ্যম দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর “সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ করতে এসেছেন শাহজাহান ওমর: ডিবি হারুন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা(ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদের বরাত দিয়ে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ করতে ঝালকাঠি-১ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহজাহান ওমর ডিবি অফিসে আসেন বলে জানানো হয়।
এ থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ স্বপদে বহাল আছেন।
মূলত, ২০১৯ সালে একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জের তৎকালীন পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদকে প্রত্যাহার করা হয়। সেসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে জানান তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের পুরোনো সে ভিডিও ব্যবহার করে তিনি পদত্যাগ করেছেন দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, হারুন অর রশিদ ঢাকা মহানগর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের(ডিবি) প্রধানের পদে বহাল আছেন।
উল্লেখ্য, পূর্বে ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের পদ হারানোর বিষয়ে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
সুতরাং, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার(ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ পদত্যাগ করেছেন দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Channel 24: “এসপি হারুনের বিষয়ে তদন্ত চলছে, অপরাধ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী”
- Ekushey Television-ETV: “ছেলের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অঝোরে কাদলেন এসপি হারুন || Ekushey ETV”
- দৈনিক ইত্তেফাক: “সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ করতে এসেছেন শাহজাহান ওমর: ডিবি হারুন”
হালনাগাদ/ Update
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে একই দাবি প্রচার হওয়ার প্রেক্ষিতে একটি টিকটক পোস্টকে দাবি হিসেবে প্রতিবেদনে যুক্ত করা হলো।
|