schema:text
| - রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগ দাবিতে গতকাল (২২ অক্টোবর) দিনভর বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। বঙ্গভবনের পাশে বিক্ষোভ করে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় সমন্বয়করাও গণ-জমায়েত কর্মসূচিতে যোগ দেন।
পরবর্তীতে একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ হঠাৎ বঙ্গভবনের সামনের ব্যারিকেড (প্রতিবন্ধক) ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করলে ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়লে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গুলিবিদ্ধ এবং আহত হওয়ার সংবাদও সামনে আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীও তৎপর হয়। এরই প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি বঙ্গভবনের এবং ভিডিওটিতে সমন্বয়কদেরকে মারধর করে তাড়াচ্ছে সেনাবাহিনী।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওগুলো সম্মিলিতভাবে প্রায় ৫ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ১৫ হাজারটি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বঙ্গভবনে সেনাবাহিনী কর্তৃক সমন্বয়কদের তাড়ানোর দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বঙ্গভবনের কিংবা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচির সাথে সম্পৃক্ত নয় বরং ভিডিওটি গত আগস্ট মাসে সিলেটের নয়াসড়ক এলাকার।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে অনুসন্ধান করলে Gulam Hasan Choudhury Sajon নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ০৮ আগস্ট আলোচিত হুবহু ভিডিওটি পোস্ট হতে দেখা যায়।
ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে বলা হয়, “সিলেটের নয়াসড়কে রাতে দোকানে গন ডাকাতি। দোকানগুলোতে ডাকাতির সময় সেনাবাহিনী উপস্থিতি হয়। বাকিটা ভিডিওতে।” যা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করে ভিডিওটি চলমান বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটের কিংবা বঙ্গভবন এলাকার নয়, বরং প্রায় দুই মাসে আগের এবং সিলেটের।
অতঃপর, অধিকতর নিশ্চিত হতে গুগল ম্যাপে জায়গাটি পর্যবেক্ষণ করলে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত “আপন” নামের কাপড়ের দোকান এবং আশেেপাশের স্থাপনাগুলোর অস্তিত্ব একইরকমভাবে গুগল ম্যাপেও পাওয়া যায়। যা নিশ্চিত করে ধারণকৃত দৃশ্যটি বঙ্গভবনের নয় বরং সিলেটের। উল্লেখ্য, গুগল ম্যাপে প্রদত্ত নয়াসড়কের ছবিটি ২০২২ সালের।
পাশাপাশি, ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ডে মানুষজনকে কথা বলতে শোনা যায় এবং এমন কিছু আঞ্চলিক শব্দ ব্যবহার করতে শোনা যায় যা মূলত সিলেটের আঞ্চলিক ভাষাতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷
উল্লেখ্য, ০৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা হারানোর খবর প্রকাশ্যে আসার পর সিলেটের নয়াসড়কসহ নানা জায়গায় ভাঙ্গচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটেছে।
তাছাড়া, বঙ্গভবন বা তার আশপাশের এলাকায় আলোচিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত স্থানের মতো হুবহু এরকম কোনো স্থানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, সিলেটের ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিওকে বঙ্গভবনে সমন্বয়কদেরকে সেনাবাহিনী মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Gulam Hasan Choudhury Sajon – Facebook Post
- Google Map – 29 Nayasarak Rd Sylhet, Sylhet Division
- Rumor Scanner’s own analysis
|