schema:text
| - সম্প্রতি “গে” দের দিন শেষ নগদের বাংলাদেশ” শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ প্রকাশ করেছে দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হয়েছে।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, “গে” দের দিন শেষ নগদের বাংলাদেশ” শীর্ষক ফটোকার্ড নগদ প্রকাশ করেনি বরং নগদের ফটোকার্ড দাবিতে প্রচারিত ছবিটি বানোয়াট। নগদের পক্ষ থেকেও বিষয়টিকে ভুয়া হিসেবে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচ্য ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করি আমরা। শুরুতেই নজরে পড়ে ফটোকার্ডের কোণায় থাকা নগদের লোগো। সম্প্রতি নিজেদের লোগো পরিবর্তন করেছে নগদ। তবে আলোচ্য ফটোকার্ডটিতে পুরোনো লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। লোগো পরিবর্তনের পরবর্তী সময় নগদের ফেসবুক পেজে প্রচারিত অন্যান্য ফটোকার্ডগুলোতে নতুন লোগো ব্যবহার করা হলেও আলোচ্য ফটোকার্ডে পুরোনো লোগো ব্যবহার সন্দেহের সৃষ্টি করে।
আলোচ্য দাবির সাথে একটি স্ক্রিনশট প্রচার হতে দেখি আমরা। স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে ‘Nogad’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে আলোচ্য ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছে।
তবে স্ক্রিনশটটি ভালোভাবে লক্ষ্য করলে বুঝা যায় উক্ত পেজটি ভুয়া। পেজের নামের বানানে ‘Nogad’ ব্যবহৃত হয়েছে, যেখানে নগদের ইংরেজি নামের বানান ‘Nagad’। নগদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজও ‘Nagad’ নামে।
পরবর্তীতে ‘Nogad’ নামের উক্ত ভুয়া পেজটি খোঁজার চেষ্টা করি আমরা। ফেসবুকে সার্চ করে ৩ লাইকের একটি পেজ পাই। তবে এই পেজে ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ পোস্ট করা হয়েছে। তাছাড়া ফেসবুক সার্চে প্রাপ্ত পেজের প্রোফাইল ফটোর সাথে উক্ত স্ক্রিনশটে থাকা ফেসবুক পেজের প্রোফাইল ফটোর অমিল রয়েছে। এই নামে আর কোনো ফেসবুক পেজও পাইনি আমরা। এর দুইটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে, হয় উক্ত স্ক্রিনশটটি এডিটেড অথবা যে পেজ থেকে পোস্টটি করা হয়েছে তা বর্তমানে আনপাবলিশ অবস্থায় রয়েছে। নিশ্চিত কারণ না জানা গেলেও এটি নিশ্চিত যে উক্ত স্ক্রিনশটটি নগদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের নয়।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে নগদের মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করি আমরা। তিনি আমাদের জানান, “আমরা (নগদ) এমন ফটোকার্ড প্রকাশ করিনি।”
জাহিদুলের সাথে যোগাযোগের পরবর্তী সময় গত ২৩ জানুয়ারি নগদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে করা এক পোস্টে আলোচিত ফটোকার্ডটিকে অপপ্রচার উল্লেখ করে জানায়, “নগদের নামে ছড়ানো এই ছবিটি তাদের তৈরি নয়। নগদের কোনো সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ থেকেও এমন কোনো পোস্ট করা হয়নি। বিভ্রান্তি ও গুজব এড়াতে তাদের ওয়েবসাইট ও অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজের সাথে থাকার অনুরোধ করা হয়।”
মূলত, বাংলাদেশি আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ “গে”দের দিন শেষ নগদের বাংলাদেশ” শীর্ষক একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভাইরাল পোস্টে নগদের যে লোগোটি দেখা যাচ্ছে সেটি পুরোনো। নগদ সম্প্রতি তাদের লোগো পরিবর্তন করে নতুন লোগো ব্যবহার করেই পেজে নিয়মিত পোস্ট করছে। Nogad নামের যে পেজের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে, সেটিও ভুয়া পেজ। নগদের পক্ষ থেকেও বিষয়টিকে ভুয়া হিসেবে নিশ্চিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জাতীয় শিক্ষাক্রমের সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান বইয়ে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক আলোচনা রয়েছে দাবি করে উক্ত পাঠ্যবই ছিঁড়ে আলোচনায় আসে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। এরপরই তাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘চাকরিচ্যুত’ করেছে বলে অভিযোগ করেন আসিফ। পরবর্তীতে সারাদেশের ব্র্যাকের সকল পণ্য ও সেবা বয়কটের ডাক উঠে। এরই প্রেক্ষিতে ব্র্যাক মালিকানাধীন মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ বয়কটের ডাক উঠে।
সুতরাং, নগদের নাম ব্যবহার করে “গে”দের দিন শেষ নগদের বাংলাদেশ” শীর্ষক শিরোনামে ইন্টারনেটে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া।
তথ্যসূত্র
- Nagad – Facebook Post
- Statement from Muhammad Zahidul Islam
- BBC Bangla – বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক, যা জানা যাচ্ছে
- Deshrupantor – আড়ং ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় বয়কটের আহ্বান
- Nagad Facebook Page
|