schema:text
| - Newchecker.in is an independent fact-checking initiative of NC Media Networks Pvt. Ltd. We welcome our readers to send us claims to fact check. If you believe a story or statement deserves a fact check, or an error has been made with a published fact check
Contact Us: checkthis@newschecker.in
Fact checks doneFOLLOW US
Fact Check
Claim: পাকিস্তানের মরুতীর্থ হিংলাজ মন্দির যা কিনা ইউনেস্কোর হেরিটেজ, ভেঙে ফেলা হয়েছে
Fact: দাবিটি মিথ্যে, যে মন্দিরটি ভেঙে ফেলা হয়েছে তাতে অনেক দিন ধরে কাজ চলছিল এবং সেটি সিন্ধে অবস্থিত
ফেসবুকে পাকিস্তানে হিন্দু শক্তিপীঠ হিংলাজদেবীর মন্দির ভেঙে ফেলা হয়েছে যা কিনা ইউনেস্কো থেকে হেরিটেজের তকমা পেয়েছে, ঐতিহাসিক স্থান এই দাবিতে কিছু পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। এই মরুতীর্থ হিংলাজ ৫১টি সতীপীঠের মধ্যে একটি পীঠ।
পাকিস্তানে হিন্দু শক্তিপীঠ হিংলাজদেবীর মন্দির ভেঙে ফেলা হয়েছে এই দাবিটি মিথ্যে, কারণ যেটি ভাঙা হয়েছে সেটি পাকিস্তানের সিন্ধে অবস্থিত এবং অনেক সময় ধরে তাতে নির্মাণ কাজ চলছে।
হিংলাজ মন্দির ৫১টি সতীপীঠের অন্যতম একটি স্থান:
হিন্দুপুরাণ মতে, দেবী সতীর মৃতদেহ যখন টুকরো টুকরো হয় তখন সেই দেহাবশেষ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পরে। পাকিস্তানের বালুচিস্তানের দেবীর পীঠস্থানকে হিংলাজ দেবী অথবা হিঙ্গুলাদেবীর মন্দির বলা হয়। এটি হিন্দুদের কাছে অন্যান্য শক্তিপীঠস্থানের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবছর বহু হিন্দু ভক্তদের সমাগম ঘটে এই শক্তিপীঠে।
টুইটারে অনেকেই এই দাবিতে পোস্ট করেছে পাকিস্তানের মতো ইসলামিক রাষ্ট্রে হিন্দু শক্তিপীঠ হিংলাজদেবীর মন্দির ভেঙে ফেলা হয়েছে। বহু মিডিয়া চ্যানেল এমনকি বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিংহও এই একই পোস্ট শেয়ার করেছেন টুইটারে।
এই পর্যায়ে আমরা পাকিস্তানের এক সাংবাদিক সঞ্জয় সাধ্বনির টুইট পাই ২৩শে নভেম্বর ২০২৩র। তিনি লিখেছেন ‘ না এটি কোনো ঐতিহাসিক মন্দির, না ধর্মীয় স্থান। একদল হিন্দু জোর করে স্থানটিকে দখল করে রেখেছিলো মন্দির নির্মাণ করার জন্য। এই স্থান আসলে যাদের তারা আদালতের দ্বারস্থ হলে, সিদ্ধান্ত হয় যে ওই অবৈধ নির্মানটিকে সত্বর ভেঙে ফেলা হবে। পাকিস্তান সরকারের এই ঘটনার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই, পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ .
আমরা পাকিস্তানের ARY সংবাদের সাংবাদিক সঞ্জয়ের সাথে যোগাযোগ করি, তিনি পাকিস্তান কোর্টের একটি নির্দেশনামা আমাদের পাঠান, যেটি জবর দখলকারী বিরোধী বিচারসভার সিদ্ধান্ত। এখানে জানতে পারি ২০২২ সালের ৭ই ডিসেম্বর নির্দেশ আসে যে ব্যক্তিগত স্থানে এই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলা হবে যেটি প্রকৃতপক্ষে অরুন বনাম পারুমলের।
নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, অরুন লোহানা আদালতে আর্জি দায়ের করে যে তার ব্যক্তিগত জমির উপর পারুমল ও তার সঙ্গীসাথীরা জবরদস্তি মন্দির স্থাপন করে। এর উত্তরে বিপক্ষ জানায় এটি তাদের পূর্বপুরুষের জমি, যেখানে আগে ধর্মশালা ছিল, এখন তারা সেখানে মন্দির বানাতে উদ্যোগী হয়েছে। আদালতের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয় এটি আসলে সরকারি জমি যেখানে কোনো প্রকার মন্দির বা অবৈধ নির্মাণ করা যাবে না।
আমরা এরপর অরুন লোহানার আইনজীবী হরিশ চান্দারের সাথে যোগাযোগ করি। তিনি জানান এটি স্বাধীনতার আগে থারপাকারের ডেপুটি কমিশনারের মাধ্যমে বিপক্ষের পূর্বপুরুষদের দান করা হয়। এখানে একটি কুয়ো ছিল। আগে সেটির ব্যবহার হলেও ধীরে ধীরে সেটি ধসে পড়তে থাকে। স্থানীয় মানুষ দিনের পর দিন সেখানে ময়লা ফেলে সেটিকে আবর্জনার জায়গায় পরিণত করে।
এরপর সেটিকে দখল করার জন্য বিপক্ষ দলটি জমিতে দেয়াল দিতে শুরু করে। এইকারণে অরুন লোহানার বাড়ির রাস্তা সরু হয়ে যায় এবং তিনি স্থানীয় রেভেন্যু অফিসারকে বিষয়টি জানান। তিনি এসে সব সরেজমিনে তদন্ত করে দেওয়ালটিকে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। তাতেও কাজ হয়নি এবং তারা পুনরায় দেওয়াল স্থাপন করে তাতে ধর্মীয় পতাকা টাঙায়। লোহানা এরপর কোর্টে গেলে গত মাসের ২৩শে নভেম্বর নির্মানটিকে গুড়িয়ে ফেলা হয়।
হরিশ আমাদের জমিটির আগের, ২০২২ সালে দেওয়াল ওঠার পর, দেয়াল ভাঙার পরের ছবি পাঠিয়েছেন।
আমাদের অনুসন্ধানে থারপারকারের এসএসপি, আলী মার্দান খোসোর একটি ভিডিও পাই যেখানে তিনি খোলসা করেছেন মিথির ক্ষাত্রী কলোনির অরুন লোহানা অভিযোগ করেন তার বাড়িরই কাছে একটি অবৈধ নির্মাণের। বাদী ও বিপক্ষ দুই দলই হিন্দু ধর্মের।
এর মাধ্যমে পরিষ্কার হয় যে নির্মানটিকে ভেঙে ফেলা হয়েছে সেটি আসলে একটি অবৈধ নির্মাণ ছিল।
অন্যদিকে আমরা প্রমান পাই যে ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকায় নাম নেই হিংলাজ মন্দিরের, এটি ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শক্তিপীঠ।
UNESCO র ওয়েবসাইটে পাকিস্তানের সিন্ধের কি কি স্থান হেরিটেজের তকমা পেয়েছে তা উল্লেখ করা আছে। মহেঞ্জোদারো, ও মাকলি এই দুটি স্থান রয়েছে পাকিস্তানের, শক্তিপীঠ হিংলাজ মন্দিরের নাম নেই।
এই পর্যায়ে আমরা একটি তালিকা পাই যেখানে UNESCO হেরিটেজ তালিকাভুক্ত করা হতে পারে এমন কিছু স্থানের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল, যার মধ্যে হিংলাজ মন্দিরের নামও রয়েছে। অর্থাৎ মন্দিরটি এখনো হেরিটেজ স্থানের তকমা পাইনি।
আমরা বালুচিস্তানের হিংলাজ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক ভার্সি মালকে দেয়ানির সাথে যোগাযোগ করি। এই ভাইরাল খবরটিকে মিথ্যে দাবি করে বলেছেন হিংলাজ মন্দির এখনো অক্ষত আছে, সেটিকে ভেঙে ফেলা হয়নি, যেটি ভাঙা হয়েছে বলে খবর রটেছে সেটি জমি বিবাদের কারণে হয়েছে।
আমাদের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে পাকিস্তানে হিন্দু শক্তিপীঠ হিংলাজদেবীর মন্দির ভেঙে ফেলা হয়েছে এই খবরটি আসলে মিথ্যে।জমি বিবাদের কারণে একটি অবৈধ নির্মাণকে ভেঙে ফেলা হয়েছে যেটি হিংলাজ দেবীর মন্দির ভেঙে ফেলার নামে ছড়িয়েছে।
Tanujit Das
January 16, 2025
Paromita Das
November 29, 2024
Vasudha Beri
November 29, 2024
|