schema:text
| - সম্প্রতি, বাংলাদেশের সিলেট জেলায় ইসলামপন্থীরা স্থানীয় এলাকায় ‘নো বীফ’ হিন্দু রেস্টুরেন্ট নিষিদ্ধ করার দাবিতে মানববন্ধন করছে শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ছবিটি বাংলাদেশের সিলেট জেলায় ‘নো বীফ’ হিন্দু রেস্টুরেন্ট নিষিদ্ধ করার দাবিতে মানববন্ধনের নয় বরং, গত ১০ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার বংশালে আল-রাজ্জাক হোটেলের সামনে ‘নো-বিফ’ খাবার হোটেল ভারত ও হিন্দুবাদীদের দালাল, তাই এই ধরণের হোটেল বর্জন করুন’ শীর্ষক দাবিতে মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত সমাবেশের ছবি এটি। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত সমাবেশে কোনো হিন্দু রেস্টুরেন্ট নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হয়নি। বরং, যেসব মুসলিম রেস্টুরেন্টের খাবারের মেনুতে গুরুর মাংস রাখা হবে না তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই সমাবেশ করা হয়।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে প্রচারিত একাধিক পোস্ট (১, ২, ৩) খুঁজে পাওয়া যায়।
এসব পোস্টের ক্যাপশনে উল্লেখিত তথ্য থেকে পুরান ঢাকার বংশালে হোটেল আল রাজ্জাকের ভেতরে ‘নো-বীফ’ সাইন থাকার বিষয়ে জানা যায়।
পরবর্তীতে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক আমাদের সময় এর অনলাইন সংস্করণে গত ১০ ডিসেম্বর “নো বীফ’ খাবার হোটেল ভারতের দালাল, বর্জনের দাবিতে সমাবেশ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির মিল পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১০ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার বংশালে আল-রাজ্জাক হোটেলের সামনে ‘নো-বিফ’ খাবার হোটেল ভারত ও হিন্দুবাদীদের দালাল, তাই এই ধরণের হোটেল বর্জন করুন’ শীর্ষক দাবিতে মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদ নামে একটি সংগঠন সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অর্থাৎ শতকরা ৯৮ জন মানুষ হচ্ছেন মুসলমান। মুসলমানরা খাবার হোটেলে গরুর গোশত খেতে চায়। কিন্তু গরুর গোশতের ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষ নিয়ে কতিপয় খাবার হোটেল গরুর গোশত রাখতে চায় না। এতে মুসলিম ভোক্তারা প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ আরিফ আল খাবীর বলেন, ‘ইউরোপ-আমেরিকায় ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলমানদের কথা বিবেচনা করে কখনোই হোটেলে হালাল খাবার রাখে না। বাধ্য হয়ে মুসলমানরা নিজেদের জন্য পৃথক হালাল হোটেল খুলে। হিন্দুদের যদি প্রয়োজন হয়, তবে তারা নিজেদের জন্য হিন্দু নাম দিয়ে পৃথক হোটেল খুলুক, কিন্তু মুসলিম হোটেলে হিন্দুদের জন্য মুসলমানদের বঞ্চিত করে তারা গরুর গোশত বন্ধ রাখবে, এমনটা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।’
অর্থাৎ, মুহাম্মদ আরিফ আল খাবীরের বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত উক্ত সমাবেশে কোনো হিন্দু রেস্টুরেন্ট নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হয়নি বরং, যেসব মুসলিম রেস্টুরেন্টের খাবারের মেনুতে গরুর মাংস রাখা হবে না, তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই সমাবেশ করা হয়।
এছাড়াও, মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তর এর অনলাইন সংস্করণে গত ১১ ডিসেম্বর “নো-বীফ’ খাবার হোটেল বর্জনের দাবিতে সমাবেশ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও এ বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়।
সুতরাং, ঢাকায় ‘নো বীফ’ মুসলিম রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত সমাবেশকে সিলেটে ‘নো বীফ’ হিন্দু রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে মানববন্ধন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Jugantor: নো-বীফ’ খাবার হোটেল বর্জনের দাবিতে সমাবেশ
- Dainik Amader Shomoy: নো বীফ’ খাবার হোটেল ভারতের দালাল, বর্জনের দাবিতে সমাবেশ
- Rumor Scanner’s Own Analysis
|