About: http://data.cimple.eu/claim-review/64f7edf11ade0376c25e9ae2f19c6d182343d562645cce30db970a00     Goto   Sponge   NotDistinct   Permalink

An Entity of Type : schema:ClaimReview, within Data Space : data.cimple.eu associated with source document(s)

AttributesValues
rdf:type
http://data.cimple...lizedReviewRating
schema:url
schema:text
  • সম্প্রতি, একটি মাছের কিছু ছবিসহ মাছটির বিষয়ে একাধিক তথ্য সম্বলিত সতর্কতামূলক একটি বার্তা ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভাইরাল এই বার্তাটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এখানে মাছের তিনটি ছবি যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ছবিতে ছবিটি ধারণের তারিখ উল্লেখ রয়েছে ১৭ অক্টোবর। অন্য ছবিগুলোতে তারিখ উল্লেখ নেই। “মিথ্যা রূপচাঁদা মাছ চান্দা মাছ থেকে সাবধান” শিরোনাম এবং মানুষকে সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়ে শুরু করা ভাইরাল পোস্টটিতে যা লেখা রয়েছে তা হলো, “আজকাল বিশেষত অনেক শহরে এবং গ্রামগঞ্জের বাজারে একধরনের মাছ বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে, যাকে মৎস ব্যবসায়ীরা রূপচাঁদা মাছ বা চান্দা মাছ অথবা চাঁদা মাছ বলছেন। এই মাছ কোথা থেকে আসে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা বলছেন, এই মাছ পুকুরে চাষ করা হয়। দামেও অন্যান্য মাছের তুলনায় বেশ সস্তা। তাই গ্রামগঞ্জে মানুষের পছন্দের তালিকায় একেবারে প্রথম সারিতে এখন এই মাছ। কিন্তু এই মাছের সম্পর্কে শুনলে আপনি চমকে উঠবেন। এই মাছ মূলত মাংসাশী শ্রেণির। এখন অনেক মৎস ব্যবসায়ীও এই মাছ চাষ করছেন। এই মাছগুলি ধরতে ও মারতে পুকুরে তীব্রমাত্রায় বিষ প্রয়োগ করতে হয়। এরা নাকি মানুষখেকো সেই পিরানহা মাছের জাত। যে জলে এই পিরানহা মাছ হয়, সেখানে নামলে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট সময় লাগে একজন আস্ত মানুষকে হজম করতে। এই মাছ চেনার উপায় হল, এর সামনের দাঁত অবিকল মানুষের মতো। এই মাছ খেলে ফুসফুস ক্যানসার, ব্রেন ক্যানসার, স্ট্রোক ইত্যাদি রোগ শরীরে দানা বাঁধে। যদি কোনো মৎস ব্যবসায়ী এই মাছ বিক্রি করেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি বিধি মোতাবেক জেল- জরিমানা হওয়ারও বিধান রয়েছে। অথচ সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে ব্যবসায়ীরা এই মাছকে রূপচাঁদা বা চাঁদা অথবা চান্দা বলে বিক্রি করে চলেছেন। কাজেই সবাইকে সতর্ক হতে অনুরোধ করছি। এই মাছ এলাকায় বিক্রি হতে দেখলে অবিলম্বে ওই মৎস্য ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন। তাঁদেরও সাবধান করুন।” এই সংক্রান্ত একটি পোস্টই প্রায় ২৪ হাজারের অধিকবার শেয়ার করা হয়েছে, যাতে রিয়েক্ট পড়েছে ৬৪ হাজারের বেশি। এই পোস্টসহ একই দাবিতে এ সংক্রান্ত আরো কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। ফ্যাক্টচেক রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মিথ্যা রূপচাঁদা বা চান্দা মাছ থেকে সাবধান শীর্ষক প্রচারিত পোস্টের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারত থেকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টটি বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, এই মাছটি মানুষখেকো নয় বলে মত দিয়েছেন ভারত ও বাংলাদেশের একাধিক বিশেষজ্ঞ। রিউমর স্ক্যানার টিম আলোচিত দাবিটির সূত্রপাত খোঁজার মাধ্যমে এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। ফেসবুক মনিটরিং টুল এবং একাধিক ম্যানুয়াল পদ্ধতির অনুসন্ধানে দেখা যায়, এ বিষয়ে উক্ত তিনটি ছবি যুক্ত করে সম্ভাব্য সবচেয়ে পুরোনো পোস্টগুলো (১, ২, ৩, ৪) পাওয়া যায় গত ২১ অক্টোবর। সেদিন একাধিক ফেসবুক পেজ এবং অ্যাকাউন্ট থেকে একই পোস্ট করা হলেও সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি (সন্ধ্যা ৭ টা ২৫ মিনিটে) করা হয় Arup Mitra নামে ভারতের কলকাতার একজন গণিত শিক্ষকের অ্যাকাউন্ট থেকে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। আরো অনুসন্ধান করে গত ০১ অক্টোবর ভারতের একটি পেজ এবং অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত ১৭ অক্টোবরে তোলা ছবিটি বাদে অন্য ছবিগুলো সমেত এবং একটি পত্রিকার কাটিং সম্বলিত একই শিরোনামের একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। পোস্টে যে পত্রিকার কাটিং রয়েছে, তার লেখার সাথে ভাইরাল পোস্টগুলোর তথ্যের দৃশ্যমান মিল পাওয়া যাচ্ছে। পত্রিকায় এই লেখাটি লিখেছেন শুভজিৎ বোস নামে একজন শিক্ষক যিনি ভারতের শিলিগুড়ির নকশালবাড়ির রথখোলায় থাকেন বলে উল্লেখ করেছেন লেখার শেষে৷ আমরা প্রাসঙ্গিক অনুসন্ধানে জনাব শুভজিৎ বোসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুঁজে পেয়েছি। তার অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তিনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ নামে ভারতের কলকাতা ভিত্তিক একটি পত্রিকায় নিয়মিতই লিখে থাকেন। তবে সেখানে আলোচিত এই কাটিংটি পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। রিউমর স্ক্যানার টিম পরবর্তীতে উত্তরবঙ্গ সংবাদ পত্রিকার সংবাদ সমন্বয়ক দীপ সাহার (Deep Saha) সাথে কথা বলেছে। তিনি আমাদের নিশ্চিত করেছেন, পত্রিকার কাটিংটি উত্তরবঙ্গ সংবাদের জনমত বিভাগে প্রকাশিত হয়েছিল। প্রায় সমজাতীয় একটি দাবি ২০১৯ সালেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। তবে, সম্প্রতি আলোচিত দাবিটি ভারত থেকেই প্রথম ছড়িয়েছে এবং এর সাথে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। ভাইরাল সতর্কতামূলক বার্তাটির উৎসের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর পোস্টে উল্লিখিত তথ্যগুলো যাচাই করে দেখার সিদ্ধান্ত নেয় রিউমর স্ক্যানার টিম৷ ভারতে এই মাছটি বিক্রি হচ্ছে কিনা বা এটির বিষয়ে কোনো নেতিবাচক ধারণা রয়েছে কিনা তা জানতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে আমরা কথা বলেছিলাম দেশটির পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vidyasagar University) ফিশারি সায়েন্স বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ড. মানোজ কুমার পাতি‘র (Dr. Manoj Kumar Pati) সাথে৷ জনাব মানোজ রিউমর স্ক্যানারকে বলেছেন, এটির বৈজ্ঞানিক নাম Piractus sp. এবং এটি এখানে (ভারতে) পাওয়া যায়। ভোক্তারা এটি পছন্দ করে এবং খাচ্ছেও। কেউ বলছে না, এটি মানুষখেকো। স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে যদি বলতে হয়, আমি মনে করি না এই মাছ খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রতিষ্ঠান United States Geological Survey এর ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, Piractus sp. বৈজ্ঞানিক নাম সম্বলিত মাছটির সাধারণ নাম unidentified pacu (অশনাক্তকৃত পাকু)। তবে এই মাছের নাম পাকু নয় বলে মনে করছেন বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা৷ রিউমর স্ক্যানার টিমকে এমনটাই জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আবদুল্লাহ আল মামুন। তারা দুজনই বলছেন, এটি পিরানহা মাছ৷ ড. আবদুল্লাহ আল মামুন এর কারণ হিসেবে বলছেন, পিরানহার মতো সাইজ নয় পাকুর। পাকু এটির চেয়েও সাইজে বড় হয়ে থাকে৷ বাংলাদেশের মাছের প্রজাতির ডাটাবেজ হিসেবে কাজ করা সংস্থা Bangladesh Fisheries Information Share Home (BdFISH) এর ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, লাল পাকু ও লাল পিরানহা এর মধ্যে বাহ্যিক পার্থক্য অতি সামান্যই যদিও খাদ্যাভ্যাস ও স্বভাবে রয়েছে বড় ধরণের পার্থক্য। যার ফলে মাছের এই প্রজাতি দুটি শনাক্তকরণে ভুল করার অবকাশ থেকে যায়। এই সাইটে লাল পাকু এবং লাল পিরানহার কিছু সুস্পষ্ট পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, পিরানহার দাঁত এক সারিতে থাকে। ভাইরাল পোস্টগুলোর ছবিতে থাকা মাছটির চোয়ালেও এক সারিতেই দাঁত দেখা যাচ্ছে। একই ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, পিরানহা সম্পূর্ণভাবে মাংসাশী (Carnivorous) অর্থাৎ কেবলমাত্র প্রাণীজাতীয় খাবারই খেয়ে থাকে। হিংস্র শিকারি মাছ হিসেবে পিরানহার পরিচিতি পৃথিবীব্যাপী বলেও উল্লেখ করা হয়েছে তাতে। এই মাছ মানুষকে আক্রমণ করে এমন নজিরও রয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ বলছেন, পিরানহা মাছ খেলে কোনও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই। তবে বাংলাদেশে এই মাছ নিষিদ্ধ রয়েছে ২০০৮ সাল থেকে। এটি নিষিদ্ধ হওয়ার পেছনে যে স্বাস্থ্যগত কোনো ঝুঁকি নেই তা স্পষ্ট জনাব ইয়াহিয়া মাহমুদের কথাতেই। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ বন্যা প্রবণ দেশ। এখন পুকুরে বা ঘেরে যদি পিরানহা মাছ চাষ করা হয় এবং সেই মাছ যদি পানিতে ভেসে অবরুদ্ধ স্থান থেকে মুক্ত জলাশয় যেমন নদী, খাল বিলে চলে আসে, তখন তাদের আক্রমণে দেশীয় ছোট বড় সব মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। ভারতে অবশ্য দুয়েকটি রাজ্য বাদে সকল স্থানেই এই মাছ বিক্রির অনুমতি রয়েছে৷ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হলেও ভিন্ন নামে এই মাছ বিক্রির বিষয়ে জানিয়েছেন ড. আবদুল্লাহ আল মামুন। নোবিপ্রবির এই শিক্ষক বলছিলেন, বাংলাদেশে এটি রূপচান্দা মাছ নামে বিক্রি হয়। তবে তা খুবই কম। কুমিল্লার লাকসামের কিছু হ্যাচারিতে এর চাষ হয়ে থাকে। মূলত, সম্প্রতি পিরানহা সদৃশ একটি মাছের কিছু ছবিসহ মাছটির বিষয়ে একাধিক তথ্য সম্বলিত সতর্কতামূলক একটি বার্তা ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে যাতে দাবি করা হয়েছে, মৎস্য ব্যবসায়ীরা রূপচাঁদা মাছ বা চান্দা মাছ অথবা চাঁদা মাছ বলে এটি বাজারে বিক্রি করছেন৷ এরা মানুষখেকো সেই পিরানহা মাছের জাত। যে পানিতে এই পিরানহা মাছ হয়, সেখানে নামলে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট সময় লাগে একজন আস্ত মানুষকে হজম করতে। এই মাছ খেলে ফুসফুস ক্যানসার, ব্রেন ক্যানসার, স্ট্রোক ইত্যাদি রোগ শরীরে দানা বাঁধে। যদি কোনো মৎস ব্যবসায়ী এই মাছ বিক্রি করেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি বিধি মোতাবেক জেল-জরিমানা হওয়ারও বিধান রয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল এই সতর্কতামূলক এই বার্তাটি ভারত থেকে প্রথম ছড়িয়েছে৷ সেখানকার একজন শিক্ষক এই মাছটিকে পাকু বলেও চিহ্নিত করে এটি খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন। তবে বাংলাদেশের দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এটির নাম পিরানহা বলে মত দিয়েছেন। তাছাড়া, এই মাছ ভারতের কয়েকটি রাজ্যে নিষিদ্ধ হলেও বাকি স্থানগুলোতে বিক্রিতে বাধা নেই। তবে বাংলাদেশে পিরানহা বিক্রি নিষিদ্ধ। সুতরাং, ভারত থেকে ছড়িয়ে পড়া মিথ্যা রূপচাঁদা বা চান্দা মাছ থেকে সাবধান শীর্ষক প্রচারিত ভাইরাল সতর্কবার্তার তথ্যাবলি বাংলাদেশের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। তথ্যসূত্র - BD Fish: লাল পাকু ও লাল পিরানহা মাছের মধ্যে পার্থক্য - Statement from Deep Saha - Statement from Dr. Abdullah Al Mamun - Statement from Dr. Manoj Kumar Pati - Statement from Dr. Mohammad Raknuzzaman - Rumor Scanner’s own investigation
schema:mentions
schema:reviewRating
schema:author
schema:datePublished
schema:inLanguage
  • Bangla
schema:itemReviewed
Faceted Search & Find service v1.16.115 as of Oct 09 2023


Alternative Linked Data Documents: ODE     Content Formats:   [cxml] [csv]     RDF   [text] [turtle] [ld+json] [rdf+json] [rdf+xml]     ODATA   [atom+xml] [odata+json]     Microdata   [microdata+json] [html]    About   
This material is Open Knowledge   W3C Semantic Web Technology [RDF Data] Valid XHTML + RDFa
OpenLink Virtuoso version 07.20.3238 as of Jul 16 2024, on Linux (x86_64-pc-linux-musl), Single-Server Edition (126 GB total memory, 5 GB memory in use)
Data on this page belongs to its respective rights holders.
Virtuoso Faceted Browser Copyright © 2009-2025 OpenLink Software