schema:text
| - সম্প্রতি, ‘অবেশেষে মেয়াদ শেষ হলো পাপনের। প্রধানমন্ত্রীর চাওয়ায় বিসিবির দায়িত্ব পেল আকরাম খান’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন- এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নাজমুল হাসান পাপনকে সরিয়ে আকরাম খানকে বিসিবির সভাপতি করেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ২০১৯ সালে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রিকেটারদের ধর্মঘট বিষয়ে করা সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের ভিডিও ফুটেজ আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে প্রধানমন্ত্রীর একটি ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে একজন উপস্থাপক বলেন, “দর্শক আলহামদুলিল্লাহ। অবশেষে অযোগ্য পাপনকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব থেকে হঠিয়ে প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত কঠিন সিদ্ধান্তে নতুন বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব দিলেন আবারও আকরাম খানকে।” এবং বিস্তারিত অংশে বলা হয়, “শেষমেশ মেয়াদ শেষ হলো এবার অযোগ্য পাপনের। যেখানে পাপন দিনের পর দিন ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্বে থেকে ক্রিকেটের উন্নতি তো দূরের কথা সেখানে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যার জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেট এখন ধ্বংশের মুখে। দীর্ঘ পঁচিশটি বছরে কোনো উন্নতির দেখা পায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কিভাবেই বা পাবে যেখানে সব লর্ড, অযোগ্যদের নিয়ে ক্রিকেট চলে তাহলে কি কোনো উন্নতি করা সম্ভাব? আর তাই পাপনের এমন অপকর্ম দেখে চরম ক্ষিপ্ত হয়ে চূড়ান্ত কঠিন এক সিদ্ধান্ত নিল। শেষমেশ এই অযোগ্য ঘুষখোর পাপনকে হঠিয়ে সবাইকে চমকে দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব হাতে তুলে দিলেন আবরও আকরাম খানের কাধেই।
তবে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও ফুটেজটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। অনুসন্ধানে, যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর ‘বিসিবির সাথে ক্রিকেটারদের সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বলেন?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওতে খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওটিতে বোর্ডের সাথে ক্রিকেটারদের সম্পর্ক নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ক্রিকেট প্লেয়ারদের ধর্মঘটটা বা হঠাৎ করেই তাদের ধর্মঘট ডাকা, আসলে তাদের যদি কোনো দাবিদাওয়া থাকত, তাহলে এই বিষয়টা তারা পূর্বেই বিসিবিকে জানাতে পারত। তারা কিন্তু সেটা করেনি, হঠাৎ করে কথা নেই বার্তা নেই, ধর্মঘটের ডাক দিয়ে বসল। আমার জীবনে আমি আজ পর্যন্ত শুনি নাই ক্রিকেট প্লেয়ার এভাবে ধর্মঘট করে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আর এই ধরনের ধর্মঘট করতে গেলে আগে তো দাবি দাওয়া উত্থাপন করে, সময় দেয়,নোটিস দেয়, তারপরে করে। সেটা তারা করেনি। যাই হোক, পরবর্তীতে আপনারা দেখেছেন যে, তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তারা গেছে বোর্ডে, সেখানে আলোচনা করে ওই চ্যাপ্টারটা তো কিন্তু মিটমাট হয়ে গেছে, ঐ সমস্যাটা আর নাই। কারণ, আমরা যেভাবে আমাদের খেলোয়াড়দের সমর্থন দেয়, বিসিবি যেভাবে সমর্থন দেয়, পৃথিবীর খুব কম দেশেই এভাবে সমর্থন দেয়।”
ভিডিওটিতে ক্যাসিনো কাণ্ডে জড়িত হওয়ার বিষয় নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া, সম্প্রতি নাজমুল হাসান পাপনকে সরিয়ে আকরাম খানকে বিসিবির সভাপতি করেছেন প্রধানমন্ত্রী এমন কোনো সংবাদ গণমাধ্যমে দেখা যায়নি।
মূলত, নাজমুল হাসান পাপনকে সরিয়ে আকরাম খানকে বিসিবির সভাপতি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, গণভবনে আয়োজিত ২০১৯ সালের সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে তৎকলীন ক্রিকেটারদের ধর্মঘট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের ফুটেজ সংগ্রহ করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, নাজমুল হাসান পাপনকে সরিয়ে আকরাম খানকে বিসিবির সভাপতি করেছেন প্রধানমন্ত্রী দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Jamuna TV: বিসিবির সাথে ক্রিকেটারদের সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বলেন?
- Rumor Scanner’s Own Analysis
|