schema:text
| - সম্প্রতি সকল গ্রেডের সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশজুড়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। ১৫ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের পর থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
এই পরিস্থিতিতে, ‘সঞ্চিতা পাল দেবী’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক পোস্ট করা হয়। বিশেষত, ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনরত একটি ছবি “তোদের রাস্তায় ফেলে গণধর্ষণ করবে আমার ভাইয়েরা” শীর্ষক ক্যাপশনে পোস্ট করা হয়। এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টের অ্যাবাউট সেকশনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক এবং বিসিএস ক্যাডার হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে।
এই পোস্টগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের নেত্রী সঞ্চিতা পাল কোটা আন্দোলনরত ছাত্রীদের প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন ফেস দ্য পিপল (ফেসবুক)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘সঞ্চিতা পাল দেবী’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি আসল নয় বরং এটি একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট। ভারতীয় নারীদের ছবি ব্যবহার করে এই ভুয়া অ্যাকাউন্টটি তৈরি করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানের শুরুতে ‘সঞ্চিতা পাল দেবী’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করা হয়। অ্যাকাউন্টটির প্রোফাইল ফটো হিসেবে একজন নারীর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
উক্ত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Pallabi Bhar’ নামের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। অ্যাকাউন্টটিতে প্রচারিত বিভিন্ন ছবির সাথে আলোচ্য ছবিটির তুলনামূলক পার্থক্য করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত ছবিটি Pallabi Bhar-এর। এটি একজন ভারতীয় নারীর ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইল। পল্লবী ভারের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের অ্যাবাউট সেকশন থেকে জানা যায়, তিনি কোলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, গত ১৪ জুন ‘সঞ্চিতা পাল দেবী’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে একজন নারীর ছবি “2014” ক্যাপশনে প্রচার করা হয়।
এই ছবিটিও রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে অনুসন্ধান করলে, ‘Parthana Paul’ নামের আরও একজন ভারতীয় নারীর ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইল খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২৩ সালের ২০ মে এই ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি থেকে আলোচ্য ছবিটি পোস্ট করা হয়েছিল।
Screenshot: instagram/parthana_paul.
অর্থাৎ, ‘সঞ্চিতা পাল দেবী’ নামের ছাত্রলীগ নেত্রী দাবি করা ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দুই ভারতীয় নারীর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। যা নিশ্চিত করে এটি একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট।
মূলত, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘সঞ্চিতা পাল দেবী’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক পোস্ট করা হয়। অ্যাকাউন্টটির অ্যাবাউট সেকশনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক বলে উল্লেখ থাকায় ছাত্রলীগের নেত্রী সঞ্চিতা পাল কোটা আন্দোলনরত ছাত্রীদের প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন দাবি করে ইন্টারনেটে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘সঞ্চিতা পাল দেবী’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া।
সুতরাং, ‘সঞ্চিতা পাল দেবী’ নামের একটি ভুয়া অ্যাকাউন্টের ভিত্তিতে ছাত্রলীগের কথিত নেত্রী সঞ্চিতা পাল কোটা আন্দোলনরত ছাত্রীদের প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।
|