schema:text
| - সম্প্রতি, ‘ইন্নালিল্লাহ খালেদার মৃত্যু, এবার জেলে গেলো প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক শিরোনাম উল্লেখপূর্বক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।
গত ২৩ জুন ‘Bangla tv’ নামে একটি চ্যানেল থেকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মারা যাননি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জেলে যাননি। অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওটিতে এ সংক্রান্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা সূত্র উপস্থাপন করা হয়নি। ভিডিওটি’র থাম্বনেইলে প্রচারিত দাবিটির সাথে বিস্তারিত অংশের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। ০৯ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে বিভিন্ন ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট উপস্থাপন করা হয়েছে।
সংবাদ যাচাই ০১
এখানে বলা হয়, আটকে আছে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের দেশে ফেরা। একের পর এক জটিলতায় ভারতে আটকে আছেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। ভারতের আইনি প্রক্রিয়া শেষে যখন দেশে ফেরার পালা, তখন দিল্লির ছাড়পত্র না পাওয়ায় তাও সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে যে সংবাদের সংবাদের স্ক্রিনশট দেখানো হয়েছে তা সমকাল এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ জুন ‘আটকে আছে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের দেশে ফেরা’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল।
সংবাদ যাচাই ০২
এখানে বলা হয়, আজ ঐতিহাসিক ২৩ জুন। উপহমাদেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (প্লাটিনাম জয়ন্তী)। দিবসটি উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ বিষয়ে যে সংবাদের সংবাদের স্ক্রিনশট দেখানো হয়েছে তা যুগান্তর এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ জুন ‘আ.লীগের প্লাটিনাম জয়ন্তীতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল।
সংবাদ যাচাই ০৩
এখানে বলা হয়, বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ফের রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভর্তি করার পর সিসিইউতে বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ডের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছে।
এ বিষয়ে যে সংবাদের সংবাদের স্ক্রিনশট দেখানো হয়েছে তা মানবজমিন এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ জুন ‘খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল।
সংবাদ যাচাই ০৪
এখানে বলা হয়, বাঘায় আ.লীগের দু-গ্রপের ভয়াবহ সংঘর্ষ-ককটেল বিস্ফোরণ, টিয়ার শেল ছুড়ে নিয়ন্ত্রণ।
এ বিষয়ে যে সংবাদের সংবাদের স্ক্রিনশট দেখানো হয়েছে তা বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এর ওয়েবসাইটে গত ২২ জুন ‘বাঘায় আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ-ককটেল বিস্ফোরণ, টিয়ার শেল ছুড়ে নিয়ন্ত্রণ’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল।
সংবাদ যাচাই ০৫
এখানে বলা হয়, বিদ্যুতায়িত স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারালেন স্বামীও। শরীয়তপুরের জাজিরায় বিদ্যুতায়িত স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে যে সংবাদের সংবাদের স্ক্রিনশট দেখানো হয়েছে তা কালবেলা এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ জুন ‘বিদ্যুতায়িত স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারালেন স্বামীও’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল।
সংবাদ যাচাই ০৬
এখানে বলা হয়, ভারতের আসামে ভয়াবহ বন্যায় নিহত ৩৭। ইতিমধ্যে প্রায় ১ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ভয়াবহভাবে বন্যার কবলে পড়েছে আসামের ১৯টি জেলা।
এ বিষয়ে যে সংবাদের সংবাদের স্ক্রিনশট দেখানো হয়েছে তা সময়ের আলো এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ জুন ‘ভারতের আসামে ভয়াবহ বন্যায় ৩৭ জনের মৃত্যু’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল।
অর্থাৎ, ভিডিওতে প্রদর্শিত সংবাদগুলোর কোনোটিতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলে যাওয়া শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ নেই।
এছাড়া একটি দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মারা গেলে কিংবা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জেলে গেলে স্বাভাবিকভাবেই তা গণমাধ্যমে ঢালাওভাবে প্রচার হওয়ার কথা। কিন্তু অনুসন্ধানে গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, হঠাৎ অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় গত ২১ জুন রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ২৩ জুন তার হৃদপিণ্ডে পেসমেকার বসানো হয় এবং পরদিন ২৪ জুন সিসিইউ থেকে কেভিনে স্থানান্তর করা হয়।
অন্যদিকে, গত ২৩ জুন আলোচিত দাবির ভিডিওটি প্রকাশ পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা যায়।(১, ২, ৩)
মূলত, Bangla tv নামে একটি চ্যানেল থেকে প্রচারিত একটি ভিডিওর থাম্বনেইলে ‘খালেদার মৃত্যু এবার জেলে গেলো প্রধানমন্ত্রী’ দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যু কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলে যাওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। ৯ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন যে সংবাদগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে তার কোথাও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলে যাওয়া দাবি সম্পর্কিত সংবাদ উপস্থাপন করা হয়নি। এমনকি ভিডিওটিতে আলোচিত দাবির সাথে প্রাসঙ্গিক কোনো তথ্যেরও উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলে যাওয়ার দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- সমকাল: আটকে আছে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের দেশে ফেরা
- যুগান্তর: আ.লীগের প্লাটিনাম জয়ন্তীতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা
- মানবজমিন: খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’
- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম: বাঘায় আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ-ককটেল বিস্ফোরণ, টিয়ার শেল ছুড়ে নিয়ন্ত্রণ
- কালবেলা: বিদ্যুতায়িত স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারালেন স্বামীও
- সময়ের আলো: ভারতের আসামে ভয়াবহ বন্যায় ৩৭ জনের মৃত্যু
- প্রথম আলো: খালেদা জিয়াকে গভীর রাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে
- BBC NEWS বাংলা: খালেদা জিয়ার যে তিনটি রোগকে বড় সংকট মনে করছেন চিকিৎসকরা
- ATN News: খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে বসানো হলো পেসমেকার
- Channel 24: ড. ইউনূস প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী
- The Business Standard: ড. ইউনূস সমানে কর ফাঁকি দিয়েছেন: প্রধানমন্ত্রী
- Jamuna TV: ‘ইউনূসকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে আওয়ামী লীগই’
- Rumor Scanner’s Own Analysis
|