Newchecker.in is an independent fact-checking initiative of NC Media Networks Pvt. Ltd. We welcome our readers to send us claims to fact check. If you believe a story or statement deserves a fact check, or an error has been made with a published fact check
Contact Us: checkthis@newschecker.in
Fact checks doneFOLLOW US
Fact Check
সম্প্রতি ফেসবুকে এক বিদ্যার্থীর সাদাকালো ছবি ভাইরাল হয়েছে যেখানে দাবি করা হয়েছে টেবিল চেয়ারে ল্যাম্পের আলোয় বসে পড়ছেন বিদ্যাসাগর। ভাইরাল ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি ভাঙা চেয়ারে বসে একাগ্র চিত্তে ল্যাম্পের আলোয় টেবলে রাখা বই পড়ছেন এক ছাত্র যাকে বাংলার শিক্ষা জগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় বলা হচ্ছে, এবং এখানে আরো দেখা যাচ্ছে মাথার লম্বা চুলকে দেওয়ালের একটি পেরেকের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। বিদ্যাসাগর লেখাপড়াকে যথেষ্ট ভালোবাসতেন। তিনি নারীশিক্ষার জন্য আন্দোলন করে, বিধবাবিবাহ প্রবর্তন করে তৎকালীন বাংলার বুকে রেনেসাঁর জন্ম দিয়েছিলেন।
ছবিটিকে চুয়াল্লিশ হাজার সাতশো জন পছন্দ করেছেন এবং ৫৬হাজার বার শেয়ার হয়েছে।
২০২২ সাল ছাড়াও একই ছবি এই দাবি সমেত ২০২১ও ভাইরাল হয়েছিল –
টেবিল চেয়ারে ল্যাম্পের আলোয় বসে পড়ছেন বিদ্যাসাগর এই দাবিতে যে ছবিটি হয়েছে তা সত্যিই বিদ্যাসাগরের কিনা জানার জন্য আমরা ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। এই পর্যায়ে আমরা My Madras নামের একটি ফেসবুকের পেজ, Kiran Kumar S নামের একটি টুইটার হ্যান্ডেল, ও Pinterest এর একটি লিংক পাই যেখানে এই ছবিটিকে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ণরত এক ছাত্রের বলে দাবি করা হয়েছে।
My Madras নামের ফেসবুক পেজ থেকে এই ছবিটিকে ২০১৪ সালের ১৮ই অগাস্ট আপলোড করা হয়েছিল।
Kiran Kumar S টুইটারে এই ছবিটিকে ২০১৪ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর সালে পোস্ট করে লিখেছেন ১৯৪৮ সালের এক মাদ্রাজি ছাত্র। এই সময় রাতের বেলায় পড়াশুনা করার সময় যাতে ঘুমিয়ে না পরে তাই তারা পেরেকের সাথে চুল বেঁধে রাখতেন।
Pinterestএর থেকে 9gag.com এর যে লিংকটি পেয়েছি সেখানেও এই ছবিটিকে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের বলা হয়েছে।
আমাদের অনুসন্ধানকে এর গভীরতর করার পর আমরা Wikimediaর একটি পেজ পাই যেখানে আরো বেশকিছু সাদাকালো পুরোনো ছবির সাথে এই ছবিটি রয়েছে। এখানে বলা হয়েছে Vlas Mikhailovich Doroshevich এর East and war নামের বইয়ের ১১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় এই ছবিটি রয়েছে। এখানে লেখা হয়েছে ‘প্রচন্ড পরিশ্রম করছে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। রাতে পড়তে পড়তে যাতে ঘুমিয়ে না পরে তাই মাথার চুল পেরেকের সাথে জুড়ে রেখেছে। এই বইটি মস্কো তে ১৯০৫ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
বঙ্গের বিদ্যালয়ে এখনো পাঠ্যপুস্তকে বাংলার মনীষীদের মধ্যে বিদ্যাসাগরের জীবনী পড়ানো হয়। যেখানে বলা হয়েছে ১৮২০ সালে মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভগবতী দেবীর ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। ১৮২৮ সালে ঈশ্বরচন্দ্রকে কলকাতার একটি পাঠশালায় এবং ১৮২৯ সালে সংস্কৃত কলেজে ভর্তি করানো হয়। তিনিই প্রথম যিনি বাংলা হাসাকে নতুন রূপ দান করেন। বর্ণপরিচয়, কথামালা, বোধোদয়ের মতো শিক্ষাক্ষেত্রে আজও ব্যবহৃত বইয়ের রচনা করে গেছেন। ১৮৯১ সালে কলকাতায় তিনি মারা যান। এবং এই ছবিটি ওনার মৃত্যুর অনেক পরে প্রকাশিত হয়েছে।
BBC বাংলার ১০ই মার্চ ২০২০ সালের একটি রিপোর্ট পাই যেখানে বলা হয়েছে বিবিসি বাংলা শ্রোতা জরীপের আয়োজন করেছিল এবং বিষয় ছিল সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী কে? এই তালিকায় অষ্টমে রয়েছে বিদ্যাসাগরের নাম। বিবিসি বাংলা ওনার পারিবারিক আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগ করে। পাঠ্যপুস্তকে যেমন বলা হয়েছে ওনার অভ্যাস ছিল পড়াশুনা করার। আর্থিক দুরাবস্থার কারণে অনেক সময় বাড়িতে আলো না থাকার কারণে তিনি রাস্তার আলোতে পড়াশুনা করতেন। এখানে বলা যেতে পারে ভাইরাল ছবিটির সাথে যা দাবি করা হয়েছে তা বাস্তবের বিদ্যাসাগরের লেখাপড়ার অভ্যাসের সাথে এই বিলাসিতা খাপ খাওয়ায় না। একই তথ্য BBC বাংলাকে দিয়েছেন ওনার তৃতীয় মেয়ে বিনোদিনী দেবীর নাতি সন্তোষ কুমার অধিকারী।
অন্যদিকে আমরা এমন কোনো তথ্য পাইনি যেখানে বলা হয়েছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কখনো মাদ্রাজ শহরে গিয়েছিলেন লেখাপড়ার জন্য।
আমাদের অনুসন্ধান অনুসারে বলা যেতে পারে টেবিল চেয়ারে ল্যাম্পের আলোয় বসে পড়ছেন বিদ্যাসাগর এই দাবিতে যে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে তা মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের।
Our sources
BBC Bangla report published on 10 March 2020
Kiran Kumar S tweet
My Madras Facebook post
Wikimedia
9gag.com
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান checkthis@newschecker.in অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন।
Tanujit Das
February 1, 2025
Tanujit Das
January 30, 2025
Tanujit Das
January 29, 2025